![]() |
দেশনায়ক তারেক রহমান |
বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সিনিয়র
ভাইস চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন,
‘দেশ কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি
নয়। দেশ
কোন রাজনৈতিক দলের একার সম্পত্তি
নয়। দেশের
মালিক জনগণ। সময়
এসেছে দেশের সবাই মিলে
দেশকে আওয়ামী ডাকাতদের হাত
থেকে উদ্ধার করার’।
যুক্তরাজ্য
বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও
নাবায়ন কর্মসূচী-২০১৭ উদ্বোধন কালে
তিনি এ মন্তব্য করেন। যুক্তরাজ্য
বিএনপি গতকাল রাতে পূর্বলন্ডনের
রয়েল রিজেন্সী অডিটোরিয়ামে উক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন
করে। এত
প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত
ছিলেন দেশনায়ক তারেক রহমান।
বক্তব্যের
শুরুতে তিনি উপস্থিত নতুন
এবং বর্তমান নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে করে বলেন, ‘গত
১ দশক ধরে বিএনপি
ক্ষমতার বাইরে। অত্যাচার,
জুলুম, গুম, খুন এবং
নির্যাতন চালানো হয়েছে এ
দলের নেতাকর্মীদের উপর। তার
পরেও বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচীতে
লক্ষ লক্ষ মানুষ নতুন
করে সদস্য হচ্ছে।
কারণ বিএনপি বাংলাদেশের মানুষের
কাছে আস্থা, আদর্শ এবং
শান্তির প্রতীক। বিএনপি
যতবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে ততবার চেষ্টা
করেছে মানুষের কল্যাণে দেশ পরিচালনা করতে
এবং মানুষ যেভাবে চেয়েছে
সেভাবে কাজ করতে।
উন্নয়ন বলতে যা বোঝায়
তাই হয়েছে এ সময়ে। কাজেই,
যারা নতুন সদস্য হচ্ছেন
সবাইকে অভিনন্দন’।
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের
প্রথম প্রেসিডেন্ট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর
রহমান এ দলের আদর্শের
নাম। তিনি
মহান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন।
তিনি বাংলাদেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত প্রথম
রাষ্ট্রপতিও বটে। ১৯৭৮
সালের সেপ্টেম্বর মাসে এ দলের
যাত্রা শুরু হওয়ার পর
এ দলে লক্ষ লক্ষ
মানুষ যুক্ত হয়েছে।
এ দলকে প্রতি পদে
পদে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে।
এ দলের প্রতিষ্ঠাতাও এদেশের
মানুষের আস্থা এবং ভালবাসার
প্রতীক’।
তিনি বলেন, ‘এখন কেউ
তার স্বাধীন মত প্রকাশ করতে
পারছে না। সাংবাদিকরা
কিছু লিখলে তা যদি
তাদের (সরকারের) মনপুতঃ না হয়
তাহলে তাহলে হয় ঐ
পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া
হয় না হয় ঐ
সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়।
তরুণ প্রজন্ম ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত। তারা
তাদের মতামত প্রকাশ করলে
তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হয়’।
সাগর-রুনি হত্যা প্রসঙ্গে
তিনি বলেন, ‘সাগর রুনির
হত্যার পর সে সময়কার
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহার খাতুন বলেছিলেন,
এই খুনের তদারকি শেখ
হাসিনা নিজে করছেন।
কিন্ত সরকারের কোন একটা বিষয়ের
দুর্নীতির তদন্ত রিপোর্ট তাদের
(সাগ্র-রুনি) কাছে থাকায়
তাদের খুন করা হয়
এবং এর কোন বিচার
হয়নি’।
অর্থমন্ত্রীর
প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি
বলেন, ‘সরকারের রাবিশ এই অর্থমন্ত্রী
শেয়ার বাজার লুটের পর
বিনিয়োগকারীদের ফটকাবাজ বলেছিলেন। এই
লুটের ঘটনায় হওয়া তদন্ত
রিপোর্ট প্রকাশ করা হলনা। অর্থমন্ত্রী
বললেন, এটি রাজনৈতিক ব্যপার
তাই এই রিপোর্ট প্রকাশ
করা যাবেনা। ক্ষমতায়
আওয়ামী লীগ। চুরি
করেছে তাদের রাজনৈতিক নেতারা। তাই
শেয়ার বাজারের চুরির রিপোর্ট প্রকাশ
করা হয়নি। চুরি
করা আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যের
অংশ। তাই
শেখ মুজিব বলেছিলেন, ‘সবাই
পায় সোনার খনি আর
আমি পেলাম চোরের খনি’।
অবৈধ শেখ হাসিনার পুত্র
এবং তথ্য ও প্রযুক্তি
উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের
প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি
বলেন, ‘দেড় কোটি টাকা
বেতন দেয়া হয় ঐ
উপদেষ্টাকে। এত
বড় উপদেষ্টা থাকার পরেও বাংলাদেশ
ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮’শ
কোটি টাকার মতন একটা
চুরি হলো। দেশের
কেউ কিছু জানলো না। এই
চুরির সংবাদ প্রকাশ করলো
ফিলিপাইনের সংবাদপত্র। অথচ
এই ঘটনায় হাসিনা কোন
কথা বললেন না এবং
সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুকে
কোন স্ট্যাটাস দিলেন না।
এ বছর ২৯ মার্চ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা FBI এর প্রতিবেদনে এই
ঘটনায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক লোকজন জড়িত বলে
খবর প্রকাশ হয়।
কিন্তু কারা সেই লোক
তা মানুষ জানতে পারলো
না। আওয়ামী
লীগ ক্ষমতায়। লোক
তাদেরই। মানুষের
রক্ত মাংসের টাকা পাচার
করে নিয়ে গেল বিদেশ। আর
এর সব সরকারের লোকের
কাজ’।
কিন্তু,
‘বিএনপির সময়ে কি এই
রকম কোন ঘটনা ঘটেছে?
প্রশ্ন রাখেন তিনি।
কাজেই এই ঘটনাগুলো হচ্ছে
এই সরকারের অপশাসন’।
তিনি বলেন, ‘সুইস ব্যাংকে
বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায়
শুধু বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া
টাকার পরিমাণ বেড়েছে।
বাংলাদেশে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ এবং
সুইস ব্যাংকের এই টাকা আওয়ামী
লীগের নেতাদের’।
ফেসবুকে
দেখা যায়, ‘মানুষ প্রশ্ন
করে, নিউমার্কেট কোন নদীর তীরে
অবস্থিত? মিরপুর, পল্লবী, চট্টগ্রাম কোন নদীর তীরে
ইতাদি ইত্যাদি। এই
হলো তথাকথিত উন্নয়নের নমুনা’।
তিনি বলেন, ‘জনগণকে বলছি,
সময় এসেছে। দেশ
আপনাদের। দেশ
কারো ব্যক্তিগত নয়। দেশ
কোন রাজনৈতিক দলের একার সম্পত্তি
নয়। সময়
এসেছে দেশের সবাই মিলে
দেশকে ডাকাতদের হাত থেকে দেশকে
উদ্ধার করার’।
তিনি বলেন, ‘ধর্ষন, গুম,
খুন এইগুলো অতীতের সব
রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
দেশের নয়, উন্নয়ন হয়েছে
কেবল সুইস ব্যাংকের।
কানাডায় বেগম পাড়ার।
আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতারা
মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম গড়ে তুলছে
চুরির টাকায়’।
বিএনপির
সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেন,
‘বাংলাদেশের কিছু পত্রিকা আছে
যারা সরকারের এসব অপকর্ম দেখতে
না পেলেও বিএনপির ১০
বছর আগের কাজের চুলচেড়া
সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত’।
দেশনায়ক
বলেন, ‘মনে রাখতে হবে,
যারা দেশকে নিয়ে ছিনিমিনে
খেলছে এবং লুটপাট করছে
তারা তাদের গড়ে তোলা
অবৈধ সম্পদ রক্ষার তাগিদেই
তারা এসব করছে।
তাদের গুজব, প্রপাগান্ডায় বিভ্রান্ত
হবেন না’।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা
কিছুদিন আগে বলেছিলেন, বিএনপি
২০০১ সালে সিআইএ এবং
র’ এর কাছে মুচলেকা
দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু
ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ দেখেও
যার নিশ্চুপ তার কার কাছে
মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে?
বাংলাদেশের বুকচিড়ে ভারতকে দেয়া ট্রানজিটের
ন্যায্য মূল্য কি বাংলাদেশ
পেয়েছে? মানুষ কি বোঝে
না তারা কাদের মুচলেকা
দিয়ে ক্ষমতায়? মানুষকে কে কি আপনারা
বোকা মনে করেন?
নেতাকর্মীদের
উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘কাজেই,
কেবল সদস্য হলেই চলবে
না, প্রতিশ্রুতি দিতে হবে দেশকে
উদ্ধার করার। ভবিষ্যতে
নিরপেক্ষ নির্বাচনে ব্যাংক ডাকাতদের প্রতিহত
করতে হবে।
তিনি বলেন, এই মাসে
টিভি খুলেই দেখা যায়
তথাকথিত শোকের আহাজারি।
এই আওয়ামী লীগ মুনাফেক
দল যারা এই মাসে
আমাদের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট
জিয়াউর রহমানকে নিয়ে মিথ্যাচার করে
যাচ্ছে একের পর এক। এর
জবাব দিতে হবে।
শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময়ে
স্বীকার করেছেন মুজিব হত্যার
সাথে আওয়ামী লীগের নেতারা
জড়িত। জাসদের
ইনু, তামেল এবং কর্নেল
তাহেরের ছোট ভাই আনোয়ার
হোসেন শেখ মুজিবের হত্যার
পরের দিন জাতীয় রেডিও
চ্যানেলে গিয়ে মোশতাককে সমর্থন
জানান। তাদেরকে
সেদিন কি কেউ বাধ্য
করেছিল? আনোয়ার হোসেন কিছুদিন
আগে এই বিষয়টি স্বীকার
করেছেন। সে
সময়ের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল কে
এম সফিউল্লাহ বলেছেন, মুজিব হত্যায় শেখ
সেলিম জড়িত। অথচ,
এই হত্যাকারীরাই আজ আওয়ামী লীগের
মন্ত্রী। আনোয়ার
হোসেন জাহাঙ্গীর নগর বিশেবিদ্যালয়ের ভিসি’।
তিনি আরো বলেন, ‘শেখ
মুজিবকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই
আগস্ট হত্যা করা হয়
আর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায়
আসেন ১৯৭৭ সালের ২১
এপ্রিল। মাঝখানের
এই দুই বছরে খালেদ
মোশাররফ জিয়াউর রহমানকে হত্যা
করতে চেয়েছিল। কিন্তু
কেন? জিয়াউর রহমান মুজিব
হত্যায় যদি জড়িত থাকতেন
তাহলে কেন তাকে হত্যা
চেষ্টা করা হয়েছিল?
‘কাজেই
শেখ হাসিনা দিনের পর
দিন মিথ্যা বলছেন।
তাদের এই মিথ্যাচার দেশের
রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, সংসদ সবকিছু
নিয়ে। কারণ,
জিয়াউর রহমান সম্পর্কে সত্য
বেড়িয়ে গেলে তাদের ভোটের
পাত্রে ভোট পরবেনা’ বলে
মন্তব্য করেন তিনি।
সবাইকে
আগামীদিনে ঐক্যবদ্ধভাবে এই অবৈধ হাসিনা
সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান
জানিয়ে তিনি বক্তব্য শেষ
করেন।
Comments
Post a Comment